জমকালো অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে শেষ হলো সিলটি পরিবারের আয়োজনে ঈদ আনন্দ আড্ডা


sylnews24 প্রকাশের সময় : এপ্রিল ৪, ২০২৫, ৬:৩৭ পূর্বাহ্ন /
জমকালো অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে শেষ হলো সিলটি পরিবারের আয়োজনে ঈদ আনন্দ আড্ডা

নিজেস্ব প্রতিবেদক : সিলটি সংষ্কৃতি পরিবারের আয়োজনে শেষ হয়েছে ঈদ আনন্দ আড্ডা। ৩ এপ্রিল (বৃহস্পতিবার) সিলেটের  মিডিয়া পাড়া খ্যাত তালতলার হোটেল গুলশান কনভেনশন সেন্টারে আয়োজিত হয় এই অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানের উল্লেখযোগ্য দেখার বিষয় ছিলো এখানে সভাপতি, প্রধান অতিথি, বিশেষ অতিথি ছিলেন না। সিলেটের সর্বস্তরের সংষ্কৃতিকর্মী  কন্ঠশিল্পী, অভিনয়শিল্পী, যন্ত্রশিল্পী, নৃত্যশিল্পী, গীতিকার, সুরকার, কম্পোজার, প্রযোজক, পরিচালক, পরিবেশকসহ সাংস্কৃতিক মিডিয়া পার্টনার সবাই ছিলেন অতিথি। তাঁদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠে অনুষ্ঠানটি। একসাথে শতাধিক কন্ঠে উচ্চারিত হয় ‘ঈদ মোবারক’। প্রয়াত সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বদের সম্মানে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

কাজী নজরুল ইসলামের অমর সৃষ্টি “ও মন রমজানের এই রোজার শেষে” গান দিয়ে শুরু হওয়া অনুষ্ঠানে কন্ঠশিল্পীরা সঙ্গীত পরিবেশন করেন, নাট্যজনরা তাদের অভিনয়শৈলী প্রদর্শন করেন, নৃত্যশিল্পীরা পরিবেশন করেন নাচ। ছিলো কৌতুক পরিবেশনা, ছিলো স্মৃতিচারণা। সিনিয়র শিল্পীদের সম্মান প্রদর্শন অনুষ্ঠানকে মহিমান্বিত করে। গল্পগুজব, কফি আড্ডা, ফটোশুট আর সেল্ফি ও রীলসে জীবন্ত হয়ে উঠে ঈদ আড্ডাটি। সকল ঘরানার সংষ্কৃতি কর্মীদের অংশগ্রহণে এধরণের অনুষ্ঠান ছিলো অভিনব এবং সিলেটে এটাই প্রথম।

বিকাল তিনটায় অনুষ্ঠান শুরু হয়ে একাটানা রাত আটটায় নৈশভোজের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শেষ হয়। এধরণের অনুষ্ঠানের আয়োজন ছিলো বিশাল চ্যালেঞ্জিং বিষয়। একটি ইফতার মাহফিলে হটাৎ সিদ্ধান্ত নিয়ে  অনুষ্ঠান আয়োজনের উদ্যোগ আলোচিত হয়। যাদের অক্লান্ত প্রচেষ্টায় এই বৈচিত্র্যময় ও মহতী অনুষ্ঠান বাস্তবতা লাভ করে তারা হলেন, ডাঃ জহিরুল ইসলাম অচিনপুরী, শাহাদত হোসেন, আফজল হোসেন, লোকমান আহমেদ সহ আরো অনেকেই।

অনুষ্ঠান আয়োজন সম্পর্কে ডাঃ জহিরুল ইসলাম অচিনপুরী বলেন, এধরনের অনুষ্ঠানের উদ্দেশ্য ছিলো সিলটি সংষ্কৃতি জগতের সিনিয়র, মিড লেভেল ও জুনিয়র কর্মীদের মেলবন্ধন ঘটানো এবং বহুধা বিভক্ত সংস্কৃতিকর্মীদের মধ্যে ঐক্য সাধনের প্রয়াস।
আমরা জানিনা অনুষ্ঠান কতটুকু সফল হয়েছে।অনুষ্ঠানের অংশগ্রহণকারীরা তা মুল্যায়ন করবেন। তবে আমরা যারা আয়োজনে সংযুক্ত ছিলাম হৃদয় উজাড় করে ভালোবাসা দিয়ে অনুষ্ঠানটিকে সফল করে তুলতে প্রয়াসী ছিলাম।

তিনি বলেন, কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি সিলটি সংস্কৃতি পরিবারের গুরুজন জামাল উদ্দিন হাসান বান্না, হিমাংশু বিশ্বাস, নাট্যজন আতিক রাহী, চন্দন রায়, শাখাওয়াত আলী শাহীর প্রতি।

আরো ধন্যবাদ জানাই শাহেদ মোসারফ (কটাই মিয়া), বেলাল আহমদ মুরাদ, ফারুক খান কয়েস, কামরুল চৌধুরী, শিপন আহমেদ, দবিরুল ইসলাম, আলীরব, আকরাম আহমেদ, পথিক রাজু, ইলিয়াস আলী সাইকন, জয়নাল আবেদিন ভুরু মিয়া, নাটকের মন্তাজ আলী, তারানা রিয়া, সোনিয়া, সুমি, পাখী সোহেল, বাউল শিল্পী বিরহী কালা মিয়া, লাল মিয়া, কন্ঠশিল্পী অধ্যাপক দাউদ, শাহজাহান, নিজাম উদ্দিন, মুক্তা মাহমুদ, অমিতাভ অভি, এম. রহমান, মুহিন চিশতী, শাহ সিদ্দিক, সংষ্কৃতি সংগঠক সোলেমান হোসেন চুন্নু, নজরুল ইসলাম মিন্টু, জান্নাত নাজনীন আশা, গীতিকবি গিয়াস সানি, রানা বাউলা, ছামির আহমেদ, মামুন শুভ, আশরাফ অনি, দেবাশিষ পল্লব, হায়দার রুবেল, সংগঠক শাহজাহান চৌধুরী, রোটাঃ নজীব, পাপ্পু দাস, আনোয়ার হোসেন মিসবাহ, পাগল দুলাল,তারেক মিয়া জনি, তাহের খান, চিত্রশিল্পী তারেক আমিন, যন্ত্রশিল্পী বিরহি আজিজ, গাজী কামরুল, গীটারিষ্ট ওয়াদুদ, সুদিপ চক্রবর্তী, প্যাডিষ্ট অলক কর, গীতিকবি জাহাঙ্গীর আলম সহ সকল গুণীজনকে তাদের উপস্থিতি ও সহযোগিতার জন্য। অলক কর তাঁর সাউন্ড সিস্টেম দিয়ে সহযোগিতা করেন।

সঙ্গীত পরিবেশন করেন, শিল্পী ইকবাল সাঁই, জেড. ইসলাম, এ.কে. ইমন, রাজন খাঁন, আইডল ইমন, উপমা তালুকদার, অনন্যা অনু, অনামিকা চৌধুরী, রাহাত শিপলু, রুনা তালুকদার, সৃষ্টি চৌধুরীসহ জনাবিশেক শিল্পী। নাচে গানে অনুষ্ঠানকে মাতিয়ে তোলেন অসংখ্য শিল্পী (সিনিয়র জুনিয়র নামের সিরিয়াল এবং সবার নাম উল্লেখ করতে পারছিনা বলে আন্তরিকভাবে দুঃখিত)।

তিনি বলেন, সীমাবদ্ধ সময়ের অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকল শিল্পীকে পারফর্ম করতে দিতে পারা সম্ভব ছিলো না। তারপরও সংষ্কৃতির বিভিন্ন ধারা, উপধারা ও ঘরানা বিবেচনায় এনে আমরা সর্বোচ্চ কাভারেজের চেষ্টা করেছি। তদুপরিও আমাদের হয়তো ভুল হয়েছে। হয়তো অনেক গুণীজনকে তাঁর প্রাপ্য সম্মান দিতে পারি নাই। এরকম কিছু হয়ে থাকলে তা সম্পূর্ণ অনিচ্ছাকৃত ও অনভিজ্ঞতাপ্রসূত। এজন্য আমরা আয়োজকরা সকলের কাছে করজোড়ে ক্ষমাপ্রার্থী।

সবার সহযোগিতা পেলে এধরনের অনুষ্ঠান ভবিষ্যতেও আয়োজন করা হবে এ আশাবাদ ব্যক্ত করছি ।